ঢাকা ০৪:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২
শিরোনাম ::
শান্তি শৃঙ্খলা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে মসজিদে মসজিদে কচাকাটা থানা ওসি কুড়িগ্রামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি দুর্জয় গ্রেফতার রৌমারীতে ৪০ হাজার মানুষের প্রাণের দাবি একটি মাত্র সেতু রৌমারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক জনের মৃত্যু কুড়িগ্রামে নানা আয়োজনে মাইটিভির ১৬ বছরে পদার্পণ অনুষ্ঠান ফুলবাড়ীতে ৯৪ বোতল ইস্কাফ সহ ১ মাদক কারবারি আটক  কুড়িগ্রামে নানা আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন কুড়িগ্রামে একুশে টেলিভিশনের রজত জয়ন্তী পালন ফুলবাড়ীতে কালবৈশাখী ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছের নিচে চাঁপা পড়ে এক নারীর মৃত্যু    কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সেনা অভিযানে চুরি ওষুধসহ আটক-২  

নাগেশ্বরীতে একটি বসত ঘর চান গৃহহীন মানসিক প্রতিবন্ধী ছামিনা বেওয়া

নূর-ই-আলম সিদ্দিক,নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: 
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের মিনাবাজার এলাকায় বাসিন্দা মানসিক প্রতিবন্ধী ছামিনা বেওয়া (৫০)। নেই জমি কিংবা থাকার ঘর। স্বামী থাকলেও হারিয়েছেন তাকেও। এখন অনেকটা ভাসমান মানুষের মতো। অন্যের জমিতে পলিথিনের ছাউনি দিয়ে কোনোমতে বসবাস তার। শীত ও বর্ষায় গুটেশুটে অতিকষ্টে থাকছেন সেখানে।
স্থানীয়রা জানান,মানসিক প্রতিবন্ধ ছামিনা অনেকটা সিজনাল মানসিক প্রতিবন্ধী। বছরের অর্ধেকটা সময় কোথায় কীভাবে থাকেন কিংবা কাকে কী বলেন তার ঠিক নেই। আর বাকিটা সময় কাটান প্রায় স্বাভাবিকের মতোই। তার বিয়ে হয়েছিলো এক ভিক্ষুকের সাথে। সংসার জীবনে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে থাকলেও ছেলেটা ছোট বেলাতেই কোথায় হারিয়ে যায় বলতে পারেন না। মেয়ে আর স্বামীকে নিয়েই ছিলো তার সংসার। নিজের সহায় সম্বল না থাকায় দুধকুমার নদের ওয়াপদা বাঁধের কিনারে অতিকষ্টে জীবন যাপন করতেন হতদরিদ্র এই ছোট্ট পরিবারটি। কিন্তু ভাগ্যের নিমর্ম পরিহাস ২০২০ সালের শেষ দিকে পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় স্বামী। মানসিক বিপর্যস্ত হলেও মেয়েকে নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন একা হয়ে। কারণ মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে। এরপরও স্থানীয়দের সহযোগিতায় ২ বছর আগে মেয়ের বিয়ে দিয়ে মাতৃত্বের দায় সেড়েছেন তিনি। সব হারিয়ে এখন যাযাবর জীবনযাপন তার। দুধকুমার নদের ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয়স্থল থাকলেও এরই মধ্যে শুরু হয় নদের বাঁধ পূঃনির্মাণ প্রকল্পের কাজ। অর্থাভাবে সরাতে পারেনি তার আশ্রয়ের ঘরটাও। কিন্তু ছামিনার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করেই সেই আশ্রয়স্থলটুকুও এসকাবেটর মেশিন (ভেকু) দিয়ে গুড়িয়ে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভেঙ্গে চূরমার হয় তার স্বপ্নের নীড়। আজ এখানে তো কাল আর এক জায়গায় যাযাবর জীবনযাপন করতে থাকেন ছামিনা। এই অবস্থা দেখে উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের মিনাবাজার এলাকায় অন্যর জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘর তুলে দিয়ে সেখাইে থাকতে দেন এলাকাবাসী। তবে সেখানেও নেই সেনিটেশন ব্যবস্থা ও টিউবওয়েল। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষায় পলিথিনে ঢাকা ঘরে অতিকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। ছামিনা বেগমের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি অনেকটা অসহায়ত্ব আর আকুতির সুরে জানান, একটা ঘরের ব্যবস্থা হলে তার খুবই উপকার হবে। কিছুটা স্বস্থিতে ঘুমাতে পারবেন স্বপ্নের নীড়ে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা ইউনিটের প্রচার সমন্বয়ক মামুনুর রশীদ মামুন জানান, পূর্ববর্তী ফ্যাসিস্ট সরকার ভুমিহীন জনগণের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করেই খাস জমি থেকে তাদের উচ্ছেদ করেছে। যার ফলে সামিনা বেওয়ার মতো আরও অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। আমরা জোর দাবি জানাই সরকারি ভাবেই এদের সবার নিরাপদ আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারিসহ সমাজের দানশীল মানুষদের সুদৃষ্টি কামনাও করেন তিনি।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শান্তি শৃঙ্খলা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে মসজিদে মসজিদে কচাকাটা থানা ওসি

নাগেশ্বরীতে একটি বসত ঘর চান গৃহহীন মানসিক প্রতিবন্ধী ছামিনা বেওয়া

আপডেট সময় : ০৮:১১:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
নূর-ই-আলম সিদ্দিক,নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: 
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের মিনাবাজার এলাকায় বাসিন্দা মানসিক প্রতিবন্ধী ছামিনা বেওয়া (৫০)। নেই জমি কিংবা থাকার ঘর। স্বামী থাকলেও হারিয়েছেন তাকেও। এখন অনেকটা ভাসমান মানুষের মতো। অন্যের জমিতে পলিথিনের ছাউনি দিয়ে কোনোমতে বসবাস তার। শীত ও বর্ষায় গুটেশুটে অতিকষ্টে থাকছেন সেখানে।
স্থানীয়রা জানান,মানসিক প্রতিবন্ধ ছামিনা অনেকটা সিজনাল মানসিক প্রতিবন্ধী। বছরের অর্ধেকটা সময় কোথায় কীভাবে থাকেন কিংবা কাকে কী বলেন তার ঠিক নেই। আর বাকিটা সময় কাটান প্রায় স্বাভাবিকের মতোই। তার বিয়ে হয়েছিলো এক ভিক্ষুকের সাথে। সংসার জীবনে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে থাকলেও ছেলেটা ছোট বেলাতেই কোথায় হারিয়ে যায় বলতে পারেন না। মেয়ে আর স্বামীকে নিয়েই ছিলো তার সংসার। নিজের সহায় সম্বল না থাকায় দুধকুমার নদের ওয়াপদা বাঁধের কিনারে অতিকষ্টে জীবন যাপন করতেন হতদরিদ্র এই ছোট্ট পরিবারটি। কিন্তু ভাগ্যের নিমর্ম পরিহাস ২০২০ সালের শেষ দিকে পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় স্বামী। মানসিক বিপর্যস্ত হলেও মেয়েকে নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন একা হয়ে। কারণ মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে। এরপরও স্থানীয়দের সহযোগিতায় ২ বছর আগে মেয়ের বিয়ে দিয়ে মাতৃত্বের দায় সেড়েছেন তিনি। সব হারিয়ে এখন যাযাবর জীবনযাপন তার। দুধকুমার নদের ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয়স্থল থাকলেও এরই মধ্যে শুরু হয় নদের বাঁধ পূঃনির্মাণ প্রকল্পের কাজ। অর্থাভাবে সরাতে পারেনি তার আশ্রয়ের ঘরটাও। কিন্তু ছামিনার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করেই সেই আশ্রয়স্থলটুকুও এসকাবেটর মেশিন (ভেকু) দিয়ে গুড়িয়ে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভেঙ্গে চূরমার হয় তার স্বপ্নের নীড়। আজ এখানে তো কাল আর এক জায়গায় যাযাবর জীবনযাপন করতে থাকেন ছামিনা। এই অবস্থা দেখে উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের মিনাবাজার এলাকায় অন্যর জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘর তুলে দিয়ে সেখাইে থাকতে দেন এলাকাবাসী। তবে সেখানেও নেই সেনিটেশন ব্যবস্থা ও টিউবওয়েল। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষায় পলিথিনে ঢাকা ঘরে অতিকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। ছামিনা বেগমের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি অনেকটা অসহায়ত্ব আর আকুতির সুরে জানান, একটা ঘরের ব্যবস্থা হলে তার খুবই উপকার হবে। কিছুটা স্বস্থিতে ঘুমাতে পারবেন স্বপ্নের নীড়ে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা ইউনিটের প্রচার সমন্বয়ক মামুনুর রশীদ মামুন জানান, পূর্ববর্তী ফ্যাসিস্ট সরকার ভুমিহীন জনগণের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করেই খাস জমি থেকে তাদের উচ্ছেদ করেছে। যার ফলে সামিনা বেওয়ার মতো আরও অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। আমরা জোর দাবি জানাই সরকারি ভাবেই এদের সবার নিরাপদ আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারিসহ সমাজের দানশীল মানুষদের সুদৃষ্টি কামনাও করেন তিনি।