রৌমারীতে বিএনপির করা মামলায় স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা গ্রেপ্তার, আসামী বিএনপির আরও ৪ জন
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপের কোন্দলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামে করা মামলায় ফাঁসানো হলো নিজ দলের নেতাকর্মীদের। এতে আওয়ামী লীগের ২৫ জন আসামীর সঙ্গে উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের ৫ জন নেতাকর্মীকেও করা হয়েছে আসামী।
মামলায় নাম আসা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা হলেন, রৌমারী উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সুজাউল ইসলাম সুজা, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক নুর মোতাকাব্বির সম্রাট, জেলা ছাত্রদলের সদস্য এলাহী শাহরিয়ার নাজিম, রৌমারী সদর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামিম আহমেদ, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য শাকিল আহমেদ। এদের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদর ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক শামিম আহমেদকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলাটি রৌমারী থানায় দায়ের হলেও মামলার বাদী রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের চর সাজাই এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে বেলাল হোসেন।
মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ মার্কার এমপি প্রার্থী আলহাজ্ব আজিজুর রহমানের একজন নির্বাচনী কর্মী হিসেবে অন্যান্য নির্বাচনী কর্মীদের সাথে প্রচার চালানোর সময় রৌমারী বাজার থেকে বেহুলার চর যাওয়ার সময় সুতিরপার ও বেহুলার চরের মাঝামাঝি সাঁকো এলাদেখো কায় উল্লেখিত আসামীগণ দেশিও অস্ত্রসহ হামলা চালায়। এতে প্রচার দলের সঙ্গে থাকা লাল মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, সাইফুল, লিয়াকত, রেজাউল, আনিছুরসহ বাদী নিজেও আহত হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি ৫টি মোটরসাইকেল ভাংচুর, একটি মোবাইল ও ৫৫ হাজার টাকা, দুটি হ্যান্ড মাইক ছিনিয়ে নেওয়ার কথা এ মামলায় উল্লেখ করা হয়।
বিষয়ে মামলার আসামী উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সুজাউল ইসলাম সুজা জানান, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ধানের শীষ মার্কার পক্ষে মাঠে ময়দানে ভোট চাওয়াসহ নির্বাচনী দলীয় সভায় বক্তব্য রেখেছেন তিনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করায় দলীয় কোন্দলের কারণে আমিসহ দলের বাকি ৪জনকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। আইন ও দলীয়ভাবে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এ মামলার আরেক আসামী যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক নুর মুতাকাব্বির জানান, ফ্যাসিস্ট সরকারের মামলা, হামলা ও নানা অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে গত ৩ বছর আগে দেশ ত্যাগ করেছেন তিনি। আওয়ামী লীগের মামলায় আমার নাম কিভাবে দেয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে লিয়াজু করা বিএনপি নেতারা?
কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রদলের সদস্য শাহরিয়ার নাজিম বলেন, ১৯ বছর থেকে ছাত্রদলের একজন সক্রিয়কর্মী হিসেবে রাজনীতি করে আসছেন তিনি। যার প্রেক্ষিতে ছাত্রদলের একাধিক কমিটিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
কথা হয় মামলার বাদী বেলাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আসামীদের তালিকা চুড়ান্ত করে আমার কাছে স্বাক্ষর নিয়েছেন রৌমারী উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির কয়েকজন নেতা।
এ বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমান বলেন, বাদী এজাহার দিয়েছেন। সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।